Pages

Tuesday, July 5, 2016

যে কোন একটা কাজ চাই

সাফল্য বলতে আসলে কতকগুলি ধাপ অতিক্রম করতে পারার দক্ষতাকে বোঝায়। কিন্তু শুরু করতে প্রথমে একটা কাজ-তো চাই। কারণ, কোন একটা কাজ পেলে অন্ততঃ শুরুটাতো করা যাবে- তাই না? তার মানে প্রথম ধাপটায় পৌছুনো যাবে। ঠিক আছে, তোমার কাজের, অর্থাৎ চাকরীর ব্যবস্থা আমি করে দেব। তবে একটা শর্ত আছে। উঁহু, এই চাকরীর জন্য তোমাকে এক টাকাও দিতে হবে না আমাকে। অনেক ভাল-বেতনের চাকরী না-হলেও মাসে অন্ততঃ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার ভিতরেই থাকবে তোমার প্রাথমিক আয়।

  যারা এই চাকরীর মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরনের পথে প্রথম ধাপে (একটা কাজ বা চাকরী) পৌছাতে পারবে, তাদের এমন মনে করার কোন কারণ নেই যে, সাফল্য চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। সেরকম যদি ভেবে থাকো, তাহলে অনেক বড় একটা ভুল হবে তোমার। কারণ তুমি মাত্র প্রথম ধাপে এসেছো। এই প্রথম ধাপ অতিক্রম করার আগে চাকরীতে তোমার প্রথম লক্ষ্য হবে টিকে থাকার চেষ্টা করা। কারণ, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই টিকে থাকার আরেক নাম হলো সাফল্য। আমার ব্ন্ধুদের ভিতরে যারা চাকরী ক্ষেত্রে ধৈর্হ্য সহকারে টিকে আছে, তারা সময়মত ইনক্রিমেন্ট পেয়েছে, প্রমোশন পেয়েছে এবং অনেকেই বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তাছাড়া তারা প্রত্যেকেই ব্যাংকে ভাল টাকা জমিয়েছে। সবচে’ বড় কথা হলো- আর কিছুদিন পরে যখন তারা অবসর গ্রহন করবে তখন একেকজন কমপক্ষে অর্ধ কোটি টাকার পেনশন পাবে। এছাড়া চাকরীতে থাকতেই তারা অনেকেই জায়গা-জমি কিনেছে, বাড়ি করেছে। তাদের ছেলেমেয়েদের ভাল স্কুলে পড়াচ্ছে। তারমানে টিকে থাকলে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়ে যায়। কিন্তু টিকে থাকতে যেয়ে তাদের কাউকেই কঠিন কোনো যুদ্ধ করতে হয়নি। যা করতে হয়েছে তা হলো সততা আর ন্ষ্ঠিার সাথে চাকরী করে যাওয়া। আরেকটি উদাহরণ দিচ্ছি। ধরো তুমি একটা মুদির দোকান দিয়েছ। এখানেও কিন্তু সেই টিকে থাকার প্রশ্নটা চলে আসে। খুঁজে দেখতে গেলে, খুব কম মুদি দোকানদারকেই পাওয়া যাবে যারা সফলভাবে অনেক বছর টিকে আছে। বেশীর ভাগ মুদি দোকানদার প্রথমে কিছুদিন ভালভাবে চালাতে পারে। পরে নানান কারণে তার ব্যবসা বন্ধ করে দেয় বা দিতে বাধ্য হয়।কিন্তু যারা টিকে থেকেছে তারা তাদের শ্রম, নিষ্ঠা, ধৈর্হ্য এবং সঠিক একটা পরিকল্পনার সাহায্যে ঠিকই তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে। চোখ মেলে দেখলে দেখবে এদের সংখ্যা কম। চাকরীর ক্ষেত্রে টিকে থাকতে হলে ৫টি খুব  গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে- 

১।  সততাঃ  সততা ছাড়া কেউ যদি সাফল্যের স্বপ্ন দেখে থাকে, আমি বলবো সে বোকার স্বর্গে বাস করছে। সততার ক্ষুদ্রতম অংশও যদি তুমি ইচ্ছাকৃতভাবে ভঙ্গ কর, জেনে রেখ- লক্ষ্যে পৌছুতে পারাটাকে তখন তুমি জটিল এবং কঠিন করে ফেলবে। তুমি হয়তো বলতে পার - কত মানুষতো দুই নম্বরী করে প্রচুর টাকা পয়সা কামাচ্ছে। তাহলে তারা কী সফল না? আমি বলবো - না, তারা সফল না। সত্যিকারের সফলতার যে সুখ এবং শান্তি- তার ধারে কাছেও নেই তারা। আক্ষরিক অর্থে তারা সুখী নয়। একজন সফল রিকশা চালকও, যে কি-না অন্য মালিকের রিকশা ভাড়া করে চালাতে চালাতে একসময় নিজেই ২০/২৫টা রিকশার মালিক হয়েছে, সে শান্তিতে যে ঘুমটা দিতে পারে, ঐ দুই নম্বরী করে ধনী হওয়া মানুষটি কিন্তু তা পারে না।শান্তি জিনিসটা টাকা দিয়ে কেনা যায় না।তবে এইটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, তুমি যদি সততা বজায় রাখ এবং যে কোন একটা কাজ দিয়ে কর্ম-জীবন শুরু কর, তাহলে তোমার লক্ষ্য পূরণ করাটা তখন হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র। একটা কাজ বা চাকরী তোমাকে অনেক কিছু দিতে পারে। কিন্তু আমি বলবো আর তুমি অন্ধের মত আমার কথা বিশ্বাস করবে - এটা আমি চাইনা। আমি চাই আমার কথাগুলি তুমি মিলিয়ে দেখ যে, তোমার লক্ষ্য পূরণের পথে আমার কথা তোমাকে সত্যি-সত্যিই সাহায্য করবে কি-না। কিংবা আমি ভুল কিছু বলছি কি-না। যদি ভুল মনে হয়, এই লেখা তোমার পড়ার দরকার নেই। এই লেখা তাহলে তোমার জন্যে নয়। এই লেখা শুধু মাত্র তাদের জন্যে যারা- শুধু স্বপ্নই দেখেই দিন পার করে না বরং নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে নিজের জ্ঞান, বিবেক-বুদ্ধি, শ্রম, সততা আর আত্নবিশ্বাস নিয়ে, সহজ একটা কাজ দিযে সহজেই শুরুটা করতে চায়। এর জন্য, আগে আমার লেখা ভালভাবে পড়তে হবে। বুঝতে হবে নিজেকে।  আর মনে রাখতে হবে- সব কিছুর উপরে সততা। সততার একটা ইমেজ তৈরী করতে সময় লাগবে। এটা রাতারাতি হয় না। তাই প্রথম থেকেই এই বিষয়টার দিকে সতর্ক-মনোযোগ রাখবে।সবাইকে বুঝতে দাও যে তুমি একজন সৎ মানুষ। তোমার প্রসংগ এলে সবার ভিতরে যেন একটা নিশ্চিত বিশ্বাস জন্মায় যে- তোমার দ্বারা খারাপ কিছু ঘটবে না। তুমি মিথ্যা কথা বলবে না।তোমার কর্তৃপক্ষকে তোমার উপর নির্ভর করতে দাও। দেখবে- এই জিনিষটাই একসময়ে তোমার সামনে এগিয়ে যাওয়াকে সহজ করে তুলবে।    

২।  শৃঙ্খলাঃ    সব ক্ষেত্রেই যে কোন কর্তৃপক্ষ তার কর্মচারীদের সুশৃঙ্খল দেখতে পছন্দ করে। তোমার যদি একটা প্রতিষ্ঠান থাকে এবং সেই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদেরকে তুমি নিঃশ্চয়ই বিশৃঙ্খল দেখতে পছন্দ করবে না। তুমি হয়তো ভাবছো আমার আবার প্রতিষ্ঠান কিসের? এটাতো অসম্ভব একটা ব্যাপার।  না, অসম্ভব কিছু নয়। তোমার একটা প্রতিষ্ঠান হতে পারে, যদি তোমার তেমন স্বপ্ন থাকে এবং বিশ্বাস থাকে যে- তুমিও একজন মানুষ। আর- মানুষ পারে না এমন কিছু নেই। কিন্তু তার জন্য তোমাকে তোমার কাজের ধাপ তৈরী করা এবং কিভাবে এরপরের ধাপে পৌছুতে হবে সেটা আগে শিখতে হবে। অথাৎ তোমাকে একটা সহজ সঠিক পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে হবে।  আর চাকরী ক্ষেত্রে তুমি যে কোম্পানীতে চাকরী করবে সেটাকেই ভালবাসতে হবে। ভাবতে হবে এটাই আমার প্রতিষ্ঠান। তাহলে দেখবে চাকরী করা তোমার জন্যে সহজ হয়ে যাবে। আর চাকরী সহজ হলে তোমার লক্ষ্যপূরণ করাও তখন সহজ হয়ে যাবে। 

৩।   পোষাক-পরিচ্ছদঃ     আমি বলবো সহজ কথায়- যে পরিস্কার পোষাক পরে সে সব জায়গাতেই গ্রহন যোগ্যতা পায়। তোমার পোষাক পরিচ্ছদ যখন ঠিক থাকবে না- তখন অনেকেই তোমার সাথে তাচ্ছিল্য করে কথা বলবে। অনেক প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের বার্ষিক-মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। সেখানে সারা বছরে তোমার পোষাক-পরিচ্ছদ কেমন ছিল, তোমার সুপারভাইজার সেটার উপরে নম্বর দিয়ে রিপোর্ট তেরী করে অফিসে জমা দিবে। যদি সেখানে তুমি কম নম্বর পাও তাহলে প্রমোশন দেরীতে পাবে অথবা পাবেই না। তোমার মূল্যায়ন যেন কোন অবস্থাতেই কমে না-যায় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকবে চাকরীর প্রথম দিন থেকেই। সেটা অনেক কঠিন কোন কাজ। মোটেই না। সুন্দর পরিচ্ছন্ন পোষাক পরার একটা অভ্যাস নিজের ভিতরে তৈরী করতে হবে। 

৪।  দায়িত্ব পালনঃ     কোন প্রতিষ্ঠানেই কাউকে তার যোগ্যতার বাইরে কোন কাজ দেয়া হয় না। তুমি যা পারবে তা-ই তোমাকে দেয়া হবে। যদি এমন কোন কাজ তোমাকে দেয়া হয় যে কাজ তুমি পার না, সেক্ষেত্রে তোমাকে প্রশিক্ষন দিয়ে সেই কাজের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। তাই দায়িত্ব পালন বিষয়ে টেনশনের কিছু নেই। তবে দাযিত্বে অবহেলা করে নিজের ক্ষতি করা উচিত নয়। আগেই বলেছি কেই তোমাকে এমন কোন কাজ দিবে না, যা তোমার দ্বারা সম্ভব নয়। তাই দ্বায়িত্ব ঠিক মত পালন করতে প্রথম থেকেই যত্নবান হওয়া উচিত। 

৫।   বাড়তি কাজঃ    বাড়তি কাজ এলে কখনো এড়িয়ে না গিয়ে ধৈর্হ্য সহকারে সেটা শেষ করে ফেলবে। যদি কোন কারণে সেটা না-পার তাহলে তোমার সুপারভাইজারকে সেটা জানাও যে- কেন তুমি পারছ না। কিন্তু ভুলেও নিজে-নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই কাজ অসমাপ্ত রাখবে না। 

কাজের ধরন দেখতে এখানে ক্লিক কর

No comments:

Post a Comment

 
Blogger Templates